Manasar Bhasan

About this text

Introductory notes

In the 18th Century, Ketakadas Kshemananda composed another rendition of the the Manasamangal Kabya, titled "Manasar Bhasan" in praise of Goddess Manasa. . This popular genre in Bengali, influenced by regional cults such as that of Chandi, Manasa, Dharma, or Vaishnav songs, flourished from the thirteenth century to the eighteenth century. The poems are typically written in the form of songs (panchalika) meant for performance by professional singers (mangal gayak) backed by a male chorus (dohar) during ritual worship of the particular deity who was the subject of the poem. "Manasar Bhasan" in book form was published by Sri Biharilal Sarkar in 1885 from the Bangabasi Press in Calcutta.

The title page of 'Manasar Bhasan' book suggests, Ketakadas and Kshemananda Das were separate persons and "Manasar Bhasan" was a joint collaboration of these two poets, it has been established subsequently that they were the same person. Kshemananda Das born in south Rarh region of Bengal, composed 'Manasar Bhasan" in the late 18th Century under the pseudonym of Ketakadas which created all the future confusion. Manasar Bhasan, as is the pattern with Mangalkavyas focuses on lives of villagefolks, seasons, and daily detail, rather than merely establishing the cult of the titular goddess.

Selection details

The title page of 'Manasar Bhasan' book suggests, Ketakadas and Kshemananda Das were separate persons and "Manasar Bhasan" was a joint collaboration of these two poets, it has been established subsequently that they were the same person. Kshemananda Das born in south Rarh region of Bengal, composed 'Manasar Bhasan" in the late 18th Century under the pseudonym of Ketakadas which created all the future confusion. Manasar Bhasan, as is the pattern with Mangalkavyas focuses on lives of villagefolks, seasons, and daily detail, rather than merely establishing the cult of the titular goddess.

1.

[Page 11]
দেবীর আজ্ঞায় হনুমান ধায়
শীঘ্র লয়ে মেঘগণ।
পুষ্কর দুষ্কর আইল সত্বর
করিল ঝড় বর্ষণ।।
আসি কালীদয়ে করিল উদয়ে
ডুবাইতে সাধুর তরী।
বীর হনুমান অতিবেগে যান
করিবারে ঝড় বারি।।
অবনী আকাশে প্রখর বাতাসে
হৈল মহা অন্ধকার।
গাঠিয়া গাবর নায়ের নফর
নাহিক দেখে নিস্তার।।
[Page 12]
গজ শুন্ডাকার পড়ে জলধার
ঘন ঘোর তর্জ্জে গর্জ্জে।
মনে পেয়ে ডর বলে সদাগর
যাইতে নারিনু রাজ্যে।।
হুড় হুড় হুড় পড়িছে চিকুর
যেন বেগে ধায় গুলি।
বলে কর্ণধার নাহিক নিস্তার।
ভাঙ্গিল মাথার খুলি।।
দেখিতে অদ্ভুত হতেছে বিদ্যুৎ
ছাইল গগনের ভানু।
বিপদ গণিয়া বলেছে রান্দিয়া
কেনবা বাণিজ্যে আইনু।।
তরী সাতখান চাপি হনুমান
চক্রাবর্ত্তে দেয় পাক।
ঘন ঘন ঝড়ে ছৈ সব যে উড়ে
প্রলয় পবন ডাক।।
হাঙ্গর কুম্ভীর আইল বিস্তর
তরীর আশে পাশে ভাসে।
জল ডিঙ্গা লয়ে রাখে পাক দিয়ে
অহি ধায় গিলিবারে আশে।।
বিপদ বিকলে কালিদ উথলে।
তরঙ্গে তরণী বুড়ে।
হইয়া বিকল কাঁদিয়া সকল
জলে ঝাঁপ দিয়া পড়ে।।
[Page 13]
ঘনের তর্জ্জনে আর বরিষণে
কান্ডারী জড় হৈল শীতে।
হস্ত পদ নাহি নাড়ে মূর্ছাগত হয়ে পড়ে
সবে মেলি রহে একভিতে।।
ডিঙ্গার নফর গ্রাসিল হাঙ্গর
কাছি গিলিল মাছে।
চাপিয়া তরণী হনুমানে আপনি
হেলায়ে দোলায়ে নাচে।।
ঘন পড়ে ঝঞ্ঝনা ভাসিল বাতনা
ভেসে গেল কালীদহ জলে।
ডিঙ্গা হৈল ডুবু ডুবু মনসার নাম তবু।
সদাগর মুখে নাহি বলে।।
যা করেন শিবশূল এবার পাইলে কূল
মনসায় বধিব পরাণে।
যত বলে বেনিয়া সেই সব শুনিয়া
কোপে জ্বলে বীর হনুমান ।।
করি হুড় মুড় পবনে করিল ঝড়
হনুমান বাড়িল যে বলে।
মতি গতি মনসা মারিয়া পাদের ঘা
সাত ডিঙ্গা ডুবাইল জলে।।
কান্দয়ে বাঙ্গাল হইনু কাঙ্গাল
ভাসে গেল পোস্তের হোলা।
বিপদে সদাগর জলের উপর
ভাসিল নিদেন বেলা।।
[Page 14]
ডুবাইয়া নায় চান্দ জল খায়
জাগতীর খল খল হাস।।
জয় জয় মনসা তুমি মা ভরসা
রচিলেন কেতকা দাস।
লম্ফ দিয়া বাহিরে চলিল হনুমান।
চক্রাবর্ত্তে ফেরে ডিঙ্গা সাধু কম্পবান।।
শিরে হস্ত দিয়া কাঁদে সকল বাঙ্গাল।
সকল ডুবিল জলে হইনু কাঙ্গাল।।
পোস্তের হোলা ভাসে গেল ছেঁকে লও কাণি।
আর বাঙ্গাল বলে গেল ছেড়া কাঁথা খানি।।
ধুলায় লোটায়ে কান্দি আর বাঙ্গাল বলে।
সাত গেটে টেনা মোর ভেসে গেল জলে।।
আর বাঙ্গাল বলে বাই ঐ বাসে মরি।
এমন নাহিক বড় উড় ছরে পরি।।
বিপাকে হারানু প্রাণ চাঁদ বেণের পাকে।
ডাকা চুরি নহে ভাই কব গিয়া কাকে।।
শতেক বাঙ্গাল তারা দিকে দিকে ধায়।
মনসার হঠে চাঁদবেণে জলখায়।।
চক্ষু রাঙ্গা ভার পেত খাইয়া চুবানি।
তবু বলে দুঃখ দিল চেঙমুড়ী কাণী।।
শুনিয়া হাসেন রথে জয় বিষহরি।
ঢোঁকে ঢাঁকে জলখায় চাঁদ অধিকারী।।
সাধুর দুর্গতি দেখে মনসা ভাবিয়া।
বসিবারে শতদল দিল ফেলাইয়া।।
[Page 15]
জল খাইয়া রক্ত চক্ষু নাহি দেখে কূল।
হেনকালে সম্মুখে দেখিল পদ্মফুল।।
চাঁদ বলে ঐ পদ্মে মনসার জন্ম।
হেন পদ্ম পরশিলে আমার অধর্ম্ম।।
এত ভারি চাঁদবেণে নাহি ছুঁইল ফুল।
জল খাইয়া মরে প্রাণে নাহি দেখে কূল।।
সাধুর দুর্গতি দেখি জগাতী মনসা।
রামকলা কাটিয়া চাঁদেরে দিল ভেলা।।
ভেলায় চাপিয়া সাধু পাইল গিয়া তট।
শিব শিব বলি সাতবার করে গড়।।
লজ্জা ভয় পায়ে রয় জলেতে বসিয়া।
নেতধোপানী তবে বলিল হাসিয়া।।
নেত বলে চাঁদ বেণিয়া তোমা নাহি জানে।
এবার সঙ্কটে উহায় রাখ গো মা প্রাণে।।
বস্ত্রবিবর্জ্জিত সাধু কাতর হৃদয়।
মনসার পাদপদ্মে কেতকাতে কয়।।
বিবসনা চাঁদবেণিয়া ভাসিতেছে জলে।
পরাতে মড়ার কাণি বিষহরি চলে।।
পরম সুন্দরী রূপে দিতে নারি সীমা।
সাত পাঁচ কুলবধূ সঙ্গে লয়ে রামা।।
জরৎকারুজায়া দেবী জয় বিষহরি।
জল আনিবারে চলে কক্ষে কুম্ভ করি।।
যে স্থানেতে চাঁদবেণে বিবসনে বসে।
সেই খানে উত্তরিলা চক্ষের নিমিষে।।
[Page 16]
কুলবধূগণ দেখি সাধু লাজ পায়।
বিবসন লাজে সাধু জলেতে লুকায়।।
সকল রমণী বলে ক্ষেপা দিগম্বর।
বিবস্ত্রে রয়েছ কেন শব কাণি পর।
শ্মশানের কাণি তবে সাধু গিয়া নগরে নগরে।।
বাম হস্তে লহা তার ছেঁড়া কাঁথা গায়।
মনসার হাতে সাধু ভিক্ষা মাগি খায়।।
কেতকায় বলে যত মনসার মায়া।
কর গো করুণাময়ি গায়কেরে দয়া।।
হাতে হোলা করি চাঁদ অধিকারী
ভিক্ষা মাগে ঘরে ঘরে।
দেখে ক্ষেপা যেন যত শিশুগণ
ইটাল ফেলিয়া মারে।।
বলে সদাগর কেন মোরে মার
নাম আমার চাঁদবেণে।
নাহি পরিচয় যাহে ইহা কয়
সর্ব্ব লোক হাসে শুনে।।
হৃষ্ট পুষ্ট অঙ্গ প্রাচীন সুসঙ্গ
ছেঁড়া কাঁথা পরিধান।
ভাঙ্গা হোলা হাতে কিছু দিল তাতে
যার ছিল ধর্ম্মজ্ঞান।।
মাগে বাড়ি বাড়ি পায় চাউল কড়ি
ধান্য পাইল আঢ়ি দুই।।
[Page 17]
পেয়ে ভাঙ্গা ঘর চাঁদ সদাগর
তার কোণে চাল থুই।।
মনসা মনেতে জানিল ত্বরিতে
গেলা গণেশের ঠাঁই।
দুই দণ্ড তরে মূষা দেহ মোরে।
এই ভিক্ষা মাগি ভাই।।
কহে গণপতি শুন গো জগাতি
সর্ব্বদা দিলাম মূষা।
নিশ্চয় স্বরূপে কহিবে আমাকে
কাহার করিলে হিংসা।।
কহেন জগাতী শুন গণপতি
কহিলে না দেহ জানি।
চাঁদ সদাগর মোরে নিরন্তর
বলে চেঙমুড়ী কাণী।।
কি আর বলিব তাহারে ছলিব
মূষা দেহ লম্বোদর।
এতেক শুনিয়া গণেশ হাসিয়া
দেখায়ে দিল সত্ত্বর।।
দেবী হৃষ্ট মনে মূষাগণ সনে
আইল চাঁদের ঘর।
মূষিক লইয়া দিল দেখাইয়া
ঐ ধান্য চুরি কর।।
দেবীর আদেশে ভূমিতে প্রবেশে
দণ্ডে বিদারিয়া মাটি।
[Page 18]
গণার ইন্দুর বড়ই চতুর
সত্ত্বরে সূড়ঙ্গ কাটি।।
মুষা মন্ত্র জানে ধান্য রাখি স্থানে
পরে গেলা গণেশের আগে।
মনসার চরণ পরম কারণ
কেতকা দাস বর মাগে।।
[Page 25]

2. নখীন্দরের কথা

দেশ দেশান্তরে চাঁদ সদাগরে
অশেষ যন্ত্রণা পায়।
পুনর্ব্বার ঘরে সনকা উদরে
নখাই জন্মিল তায়।।
[Page 26]
এক দুই তিন গণি দিন দিন
পঞ্চমাস গর্ভকালে।
কাতর বেণেনী চক্ষে পড়ে পাণী
আপন সখীরে বলে।।
শুন গো বেণেনী আমি অভাগিনী
দূর দেশে প্রাণনাথ।
নাহি সুখ লেশ না জানি বিশেষ
উদরে না রুচে ভাত।।
আমি অভাগিনী অতি যে দুঃখিনী
কান্দি ছটি পুত্রশোকে।
মনে মনে পুড়ি ছয় ছয় রাঁড়ি
তুষের সীজাল বুকে।।
ঐ শোকে মোর নয়নের নীর
রজনী দিবস ঝরে।
এ বৃদ্ধ বয়সে প্রভু পরবাসে
বিধি কি না কৈল তারে।।
পঞ্চমাস গর্ভ লোকে বলে সর্ব্ব
শুন ঝেউ বলি তরে।
কতেক দিবস মনের মানস
সাধ খাওয়াইবে মোরে।।
পায়স পিষ্টক খাইতে মিষ্টক
ঘৃতে সম্বরিরা শাক।
পাতখোলা কচি পাইয়া হেন বুঝি
প্রাণ তারে দেই ডাক।।
[Page 27]
পান্ত যে ওদন তাহে পোড়া মীন
পাইলে ভোজন করি।
পাইলে মিঠা তক্র তাহে পাই স্বর্গ
গ্রাস করি দুই চারি।।
সরল সফরী পাইলে গো চারি
বোদালী হিমিচা সনে।
গর্ভবতী লোক পেটে হয় ভোক
তোলা পাড়া মনে মনে।।
ঝেউরা চেড়ী তারে হরিষ অন্তরে
সাধ খাওয়াইলে সুখে।
সদাই অলস মনে অসন্তোষ
ঘর্ম্ম বিন্দু বিন্দু মুখে।।
অষ্ট মাসে রামা মনেতে অক্ষমা
ঘন মুখে উঠে হাই।
নয় দশ মাসে মনের মানসে
দাসী ডেকে আনে দাই।।
ক্ষণে উঠে বৈসে মনে ভয় বাসে।
আকুল প্রসব ব্যথা।
নিদ্রা ভয় হেন হইল বদন
মুখেতে না সরে কথা।।
কাতরা বেণেনী চক্ষে পড়ে পাণী
দশ মাস দশ দিনে।
মনসার বরে পুত্র নখীন্দরে
প্রসবিল শুভক্ষণে।।
[Page 119]

3. বেহুলার স্বদেশে আগমন।

মায়ারুপে ভিক্ষা মাগে বেহুলা নখাই।
নিছনী নগরে লোক কেহ চেনে নাই।।
বেহুলা নখাই দোঁহে যোগী আর যোগীনী।
ঘরে ঘরে মাগে ভিক্ষা হইয়া মায়াবিনী।।
সবাকার বাড়ী গিয়া শিঙ্গার ধ্বনি করে।
শিব শিব বলিয়া তাদের বচন নিঃসরে।।
বেহুলা নখাই ভিক্ষা মাগে বাড়ী বাড়ী।
থালের উপরে কেউ দেয় চাউল কৌড়ি।।
থাল দিতে চাউল কৌড়ি আচম্বিতে উড়ে।
বুঝিতে না পারে কেহ বলে নানা ভাবে।।
[Page 120]
বেহুলার বাপ যিনি সায় সদাগর।
নগরের মধ্যস্থলে তার বটে ঘর
অপূর্ব ঘরের দ্বার বিচিত্র আকার।
প্রাচীর প্রমাণ তার চারি দিকে ঘর।।
বাটীর ভিতরে ঘর সোনার নিছনী।
সায় সদাগর তাতে অমলা বেণেনী।।
বেহুলা নাচনী গেল মা বাপ দেখিতে।
মায়া বলে কেহ তারে না পারে চিনিতে।।
দুই প্রহর বেলা যখন গগনমণ্ডলে।
যোগী আর যোগীনী তারা প্রবেশে মহলে।।
সত্য জানি বলি হয় শিঙ্গার যে ধ্বনী।
ঘরে হৈতে শুনে তাহা অমলা বেণেনী।।
সুবর্ণের থালায় দিবেন চাউল কৌড়ি।
নখাই অন্তর হইল দেখিয়া শাশুড়ী।।
বিমুখ বণিক বলি পরম লজ্জায়।
বেহুলা ঈষৎ হাসে পীযুষের প্রায়।।
চাউল কৌড়ি দেয় রামা যোগিনীর থালে।
আচম্বিতে উড়ে তাহা দেবী অনুবলে।
অমলা বেণেনী তখন দেখি এত সব।
যোগিনীরে জিজ্ঞাসিল করি বহুস্তব।।
সত্য সত্য কহ মোরে শুন গো যোগিনী।
এ তিন ভুবনে আমি বড় অভাগিনী।।
তোমায় দেখিয়া শোকে কান্দে মম প্রাণ।
মোর এক কন্যা ছিল তোমার সমান।।
[Page 121]
না জানি কোথায় গেল মড়া লৈয়া কোলে।
যোগিনী জাগালে শোক বেহুলা বদলে।।
বিশেষ করিয়া মোরে কহ আদ্য মূল।
থাকে দিতে নাহি কেন কৌড়ি আর তণ্ডুল।।
বেহুলা বলেন তুমি কি কর জিজ্ঞাসা।
যোগী যোগিনী মোরা তরুতলে বাসা।।
নগরে মাগিয়া খাই হাতে করি থাল।
সন্ধ্যাকালে হৈলে মোরা যাই তরুতল।।
ইহা বিনা আর মোরা কিছু নাহি জানি।
ইথে কিবা বুঝ তুমি অমলা বেণেনী।।
অমলা বেহুলা মুখপদ্ম যে নেহালে।
দ্বিতীয় বেহুলা তুমি বেহুলা বদলে।।
তোমারে দেখিয়া মোর বিদরে হৃদয়।
বেহুলা নখাই বট দেহ পরিচয়।।
বেহুলা বলেন মা পরিচয় দিব কি।
যোগী তোর জামাই যোগিনী তোর ঝি।।
বেহুলা নখাই বটে না কান্দিহ আর।
প্রাণপতি জীয়াইয়া করি যে উদ্ধার।।
শুনিয়া অমলা কান্দে পাইয়া পূর্ব্বশোক।
ক্রন্দন শুনিয়া আইল নগরের লোক।।
কেন কান্দ শুন বলি অমলা বেণেনী।
কেহ বলে দেশে আইল বেহুলা নাচনী।।
দেখিয়া শুনিয়া লোকের লাগে চমৎকার।
মৃত নখীন্দর জীয়ে আইল পুনর্ব্বার।।
[Page 122]
কোথাও না দেখি হেন কোথাও না শুনি।
মৃত পতি জীয়াইল বেহুলা নাচনী।।
শুনিয়া হরিষে আইল সায় সদাগর।
বেহুলার ভাই আইল ছয় সহোদর।।
বেহুলারে ধন্য ধন্য করে সর্ব্বলোক।
এত দিনে পিতা মাতার নিবারিল শোক।।
অমলা বলে বেহুলা আইস নিজ ঘরে।
বেহুলা বলেন আমি যাব কোথাকারে।।
শুন শুন জন্মদাতা শুন গো জননী।
মোর কান্তে খেয়েছিল দেবীর কালফণী।
আমার স্বশুর তাঁর করে অপমান।
এত দিনে পূজিবেন হইয়া সাবধান।।
আর কিছু মোর তরে না কর জিজ্ঞাসা।
পরিচয় শেষ আছে পূজিলে মনসা।।
যাত্রাকালে প্রণাম করিল বাপ মায়।
হায় হায় বলি রামা ধূলায় লোটায়।।
কাতর হইয়া কান্দে নগরের লোক।
কেন বা আইলে তবে জাগাইতে শোক।।
বিনয় প্রণতি কৈল পিতার চরণে।
বিদায় হইলা পুরী কান্দয়ে সঘনে।।
পুনর্ব্বার বেহুলা নখাই দুই জনে।
চাঁপাতলায় আইল বহিত্র যেই খানে।।
বহিত্রের কাছে গিয়া বেহুলা নখাই।
পরিচয় বুঝিয়া মায়া সৃজিল তথাই।।
[Page 137]

4. সাধুর মনসা পুজা

দেবী পুজা আরম্ভিল পূরীর ভিতর।।
কুল পুরোহিতে আনে দ্বিজ জনার্দ্দন।
পূজা দেখিবারে আইল লক্ষ লক্ষ জন।
বিশ্বকর্ম্মা নির্ম্মিত হৈল শুবর্ণের ঝারি।
সিন্দুর মণ্ডিত কৈল দিয়া পুষ্পবারি।।
বসনাদি দিয়া আনে কুল পুরোহিতে।
আনন্দে বসিল সাধু জগাতী পূজিতে।।
[Page 138]
কনকের ঘটে আরোপিলা সিজ ডালা।
কাঁচা দুগ্ধ দিল ঢালি আর পুষ্পমালা।।
সুবর্ণের থালে খুরী সুবর্ণের ঝারী।
নানা উপহারেতে নৈবেদ্য সারি সারি।।
আতপ তণ্ডুল কলা লুছি আর পক্কান্ন।
ঘৃত মধু ক্ষীরখণ্ড বিবিধ মিষ্টান্ন
নানাবিধ মিষ্টান্ন আর শাঁচা নবাত।
দেবী পূজা করে সাধু পূরে মনোরথ।।
পাকা অম্র তাল ফল উত্তম খর্জ্জূর।
কনকের থালে কৈল আমান্ন প্রচূর।।
ধুপ ধূনা আদি করি ঘৃতের প্রদীপ।
যেই রূপে সদাগর নিত্য পূজে শিব।।
নানা প্রকার বাদ্য বাজে কাড়া পড়া ঢোল
কায়ের মঙ্গল গান মধুর সুবোল।।
স্বপুরী সহিত সাধু করে দেবী পুজা।
ঊরগো ঊরগো দেবী সুরতর তেজা।।
পূর্ব্ব দুঃখ দোষ ক্ষম আপনার দাসে।
মনসার নাম জপে মনে ভয় বাসে।।
পুঁথি হাতে মন্ত্র জপ করে দ্বিজবর।
পূজে পঞ্চ দেবতায় চাঁদ সদাগর।।
মহোৎসব আনন্দ হইল বহুতর।
মনসাকে চিন্তা করে চাঁদ সদাগর।।
মনসা জগাতী হেতা জানিল অন্তরে।
অস্থির হইল দেবী সিজুয়া শিখরে।।
This is a selection from the original text

Keywords

চাউল, ঝড়, বর্ষণ, ভিক্ষা, ভিক্ষা

Source text

Title: Manasar Bhasan

Author: Ketakadas, Kshemananda Das

Publisher: Biharilal Sarkar

Publication date: 1886

Original compiled c.18th century

Edition: 1st Edition

Place of publication: Calcutta

Provenance/location: This text was transcribed from print at the National Library of India. Original compiled c.18th century

Digital edition

Original author(s): Ketakadas Das, Kshemananda Das

Language: Bengali

Selection used:

  • 1 ) pages 11 to 18
  • 2 ) pages 25 to 26
  • 3 ) pages 119 to 122
  • 4 ) pages 137 to 138

Responsibility:

Texts collected by: Ayesha Mukherjee, Amlan Das Gupta, Azarmi Dukht Safavi

Texts transcribed by: Muhammad Irshad Alam, Bonisha Bhattacharya, Arshdeep Singh Brar, Muhammad Ehteshamuddin, Kahkashan Khalil, Sarbajit Mitra

Texts encoded by: Bonisha Bhattacharya, Shreya Bose, Lucy Corley, Kinshuk Das, Bedbyas Datta, Arshdeep Singh Brar, Sarbajit Mitra, Josh Monk, Reesoom Pal

Encoding checking by: Hannah Petrie, Gary Stringer, Charlotte Tupman

Genre: India > poetry

For more information about the project, contact Dr Ayesha Mukherjee at the University of Exeter.

Acknowledgements