অই যায় অই যায় রে হরিঞা লঞা যায় ।
রাজনন্দিনী রথের উপরে যায় দেবী শিরোমুনি ।।
ধুয়া ।
কালি কালি বল্যে মাতা তিন ডাক দিল ।
নোটনে আছিল কালি নিকটে ডাড়াল্য ।
ধর ধর কালি গো বাটার পান খা ।
দক্ষিণসাগর ঘরে ডণ্ড পুর গা ।
যে আজ্ঞা বলিঞা কালি করিলা গমন ।
রাজার দক্ষিণ সাগর ঘরে দিলা দরশন ।
রাজার সিঅরে কালি ই দণ্ড পুরিল ।
চাম্পা নগরখানি কুআ বিষ্টি হৈল ।
কুআর প্রলয় যে হইল নগর ।
হাথে ধর্যা রথে বৈসাল বেউলা লক্ষিন্দর ।
হাহার্ককার হৈল রাজ্য সে চাম্পা নগর ।
রথ উঠাইল মাদাই সুন্দর ।
একে ত দেবীর আজ্ঞা মাদাএর গমন ।
একেক পা ফেলিছে মাদাই চৌরাসি যোজন ।
রথে রোদন জুড়িলা ইন্দ্র-বিদ্যাধরী ।
চিনিছিলা মাদাই রথ চলিল্যা মাধুরী ।
ডাক দিঞা বলে মাতা দেবী বিষহরি ।
কেনে বাছা মাদাই তুমি চলিছ মাধুরী ।
মাদাই রথ বলে মাতা নিবেদন করি ।
রোদন করিছেন ইন্দ্র-বিদ্যাধরী ।
উপর কোঠায় মাতা বসিঞা আছিল ।
বেউলার নিকটে মাতা উপনীত হৈল ।
[Page 135]
ডাক দিঞা বলে মাতা মনসা দেবগণ ।
রোদন করিছ বাছা কিসের কারণ ।
বেউলা বলেন মাতা করি নিবেদন ।
প্রাণনাথ আপন পিতার সঙ্গে কৈলা দরশন ।
বিভার পরদিনে আইলাম বিদায় হইঞা ।
পুর্নুবার মাএর পদ না দেখিলাম যাঞা ।
ডাক দিঞা বলেন মাতা জয়- ব্রহ্মানি ।
নিজ বেশ ছাড়া হয় যোগিয়া-যোগিনী ।
যোগিয়া-যোগিনী বেশে করহ গমন ।
আপন পিতামাতার সনে কর দরশন ।
যা আজ্ঞা বলিঞা সভে করিলা গমন ।
নগর উজানিতে যাঞা দিলা দরশন ।
ভিক্ষার ছলাতে সাএরের দুআরে ডাড়াল্য ।
ভিক্ষা দাও ভিক্ষা দাও বলিতে লাগিল ।
ভিক্ষার শবদ তবে শুনিবারে পাল্য ।
সুবর্ণের থালে চিড়ি ভিক্ষা লইল ।
যোগিআ যোগিনীর কাছে আসিঞা ডাড়াল্য ।
যোগী বলে চিড়ির হাথে ভিক্ষা নাহি নি ।
যদি ভিক্ষা দেন রাণী তবে ভিক্ষা নি ।
একথা শুনিঞা চিড়ি করিলা গমন ।
রাণীর সাক্ষাতে যাঞা দিলা দরশন ।
[১২২ খ] শুন শুন অগো রাণী নিবেদন করি ।
দুআরে ডাড়ায় এক যোগিয়া যোগিনী ।
শুন শুন অগো রাণী মু বোলো তোমারে ।
তোমারে ঠাঞি ভিক্ষা নিব বলিছে সত্তরে ।
সুবর্ণের থাল রাণী হাথে কর্যা নিল ।
যোগিআ যোগিনীর কাছে আসিঞা ডাড়াল ।
ভিক্ষা নিবার তরে বেউলা হৈলা আগুসার ।
লখাই পেছুঞা ডাড়ায় দেখিঞা শ্বাশুড়ি ।
যোগিনীকে দেখে বেউলার মুখ পড়ে গেল মনে ।।
বেউলা বলে অগো মাতা তোরে নিবেদি ।
যোগী তোমার জামাতা আমি তোমার ঝি ।
নেত বলে অগো মাতা কাজ মন্দ হৈল ।
পরিচয় হইলে বেউলা আনিতে নারিব ।
এতেক শুনিঞা মাতা চিন্তিত অন্তরে ।
হাথে ধর্যা রথে তোলায় বেউলা লক্ষিন্দরে ।
উজানি নগর দেখ হাহাকার হৈল ।
পবন গমনে রথ চলিতে লাগিল ।
একে ত দেবীর আজ্ঞা মাদাএর গমন ।
একেক পা ফেলিছে মাদাই চৌরাশি যোজন ।
বচন বলিতে রে যোজন পথ যায় ।
জোমালএর কুলে রথে আসিঞা ডাড়ায় ।
ধর্মপাঁজি ব্রহ্মখড়ি জোমের হাথে ছিল ।
সকাএ মনুষ্য যায় জানিবারে পাইল ।
মার শবদ যমদূত ধাঅ ।
বিষ-নআনে মা দূতের পানে চায় ।
ধাঞা ছিল জম...[১২৩ ক] নেত বলে
শুন বেহুলা করি নিবেদন ।
কহিব অপুর্ব যমপুরীর কথন ।
নদী বেত বলিব হে কি কত বাখান ।।
অমিত্য শলিল পান করে পুণ্যবান ।
স্থানে স্থানে সরোবর উত্তম ভুবন ।।
ইন্দ্রপুরী হৈতে শুভা অতি য়নুপাম ।
কতশত পাপিচারি বেশে পুণ্যবান জনে ।।
পাপিগণ পাপ ভুগ করএ দক্ষিণে ।
যেহ দ্বারে জেই জন যায় জমপুরী ।
তার কথা শুন বেহুলা সুন্দরী ।
পুরী উত্তর দ্বার অতি শুসভন
প্রবাল মোদ্ধ তাহে অতি মনোরম ।।
গমনে অপুর্ব পথ ছায়া জল জুত ।
[Page 136]
ভিক্ষভোজ্য উপহার সর্ব সুব সুত ।
দেব অতি সোসভন ।।
নানা ভোগদ্রর্ব আছে য়মিত্ত শুমান ।
সম্মুখ শংগ্রামে যত মরে যোদ্ধাগণ ।
পছ্যিম দুয়ারে যায় যমের সদন ।
পুর্বদ্বার সুবিস্তার পরম সুন্দর ।
দধি দুগ্ধ ভক্ষ দ্রব্য য়মি সুস্রর ।
স্বামীর সহিত মরে যত নারীগণ ।
স্বামীর সহিত বহে নদী বৈতরণী ।
পাপী পার হতে নারে পরসিঞা পানি ।
মোস্থকে দারুণ দূত করএ প্রহার ।
স্যাতরিঞা পাপীগণ কষ্টে হয় পার ।।
[১২৩ খ] পিতের পূন্যে পুত্ত যদি বিষদান ।
চাপিঞা তরণী তবে পার হঞা জান ।
তারপর দেখি পাপীর বড় বড় ক্রীড়া ।
মোস্তকে শুনিত খায় পায় বর পিড়ে ।
কেসরি বন্দিত হয় হৈতে নারে পার ।
প্রবিনন্দকুর পথে খের অন্ন কায় ।
চোরাশী সহস্র কুণ্ড নরক দক্ষিণে ।
তার কথা কহি বেহুলা শুন সাবধানে ।
বজ্রকীট মহাপোকা নরক ভিতর ।
পাপীর শরীর ত্যাগ হয় নীরান্তর ।
স্বামীকে অবিজ্ঞা করে স্থাপিত হরণ ।
দেবদ্বিজ গুরু নিন্দা করে যেই জন ।
তাহার পতন খের নরক ভিতর ।
দূতগণ প্রহার করএ নিরান্তর ।।
চিত্তগোপ্ত করে ধর্মাধর্মের বিচার ।
কহ্ম অনরূপতে ভোগ করএ সংসার ।
মহানদী তীরে বহে পুরিআ সুগীত ।
বিস্তার যোজন শত কন্টকে পুরিত ।
গোবধি স্ত্রীবধি পাপী তথাকারে যায় ।
গুরুজায়া হরে যারা কপট মায়াঅ ।
নদীর কুলেতে বৈসে দহ তরুবর
[পৃ ১২৪ ক] শ্রীদুর্গা শ্রীদুর্গা শ্রীহরি শ্রীহরি
শ্রীদুর্গা ।