Dharmamangal

About this text

Introductory notes

Mangalkabya is a popular genre in Bengali, influenced by regional cults such as that of Chandi, Manasa, Dharma, or Vaishnav songs, flourished from the thirteenth century to the eighteenth. However, mangal kavya poems appear to have been written until the start of the nineteenth century. The poems are typically written in the form of songs (panchalika) meant for performance by professional singers (mangal gayak) backed by a male chorus (dohar) during ritual worship of the particular deity who was the subject of the poem. Dharmamangala by Manikram Ganguly was composed in the later half of the 18th Century.

The present volume was published by Calcutta University in 1960. The book was edited by Bijitkumar Datta and Sunanda Datta, both were professors of Bengali at the University. The current edition is based on a manuscript discovered by Panchanan Mandal in Manikram's ancestral village, in present day Hooghly district of West Bengal. It has been determined that the poem was composed sometime in the second half of the 18th Century. Dharmamangal, keeping with the tradition of Mangalkavyas focuses on lives of villagefolks, seasons, and daily detail, rather than merely establishing the cult of the titular goddess.

Selection details

The present volume was published by Calcutta University in 1960. The book was edited by Bijitkumar Datta and Sunanda Datta, both were professors of Bengali at the University. The current edition is based on a manuscript discovered by Panchanan Mandal in Manikram's ancestral village, in present day Hooghly district of West Bengal. It has been determined that the poem was composed sometime in the second half of the 18th Century. Dharmamangal, keeping with the tradition of Mangalkavyas focuses on lives of villagefolks, seasons, and daily detail, rather than merely establishing the cult of the titular goddess.

[Page 67-69]

1. দ্বিতীয় পালা

এত বলি প্রেয়সীকে প্রবোধভারতী।
নিদয়েতে লুহিতচন্দ্রে কাটে নরপতি।।
মস্তক কাটিয়ে কাটে কর পদ আর।
তা দেখে যতেক লোক করে হাহাকার।।
ঐমনি আছাড় খেয়ে পড়িল মদনা।
ব্যস্ত হয়ে তুলে তাকে যতেক অঙ্গনা।।
কাতরা হইয়া কেহ জল দেয় মুখে।
করাঘাত মারে কেহ আপনার বুকে।।
কেহবা নিচোলাচলে করয়ে বাতাস।
কেহ কান্দে উর্দ্ধ মুখে না সন্বরে বাস।।
চেতন পাইয়া রানী ক্ষণেক ব্যতীতে।
লইয়া লুয়ার মুন্ড লুকায় নিভৃতে।। অত্র ভনিতা ।।৩৪।।
পিশিত প্রস্তুত করে অমরার কর্তা।
পাক হেতু প্রভু আগে পুছে গিয়া বার্তা।।
প্রস্তুত করিয়া আনু পাক আয়োজন।
শুভ কর শীঘ্র হয়ে রন্ধন ভোজন।।
ধর্ম কন ধর্মশালা তোমার বনিতা।
শুনি নাকি সুপাচিকা সদাচারপূতা।।
পক হেতু প্রেষিত করগে তাকে তুমি।
আগস নাহিক অনুমতি করি আমি।।
শুনে রাজা সত্বরে কহিল মদনাকে।
প্রেয়সী প্রভুর আজ্ঞা হইল তোমাকে।।
স্নান করে চপলে চড়ায়ে দেহ পাক।
অহ হল্য অতীত অতিথি অগ্রবাক।।
পতিবাক্যে পদ্মিনী করিতে গেলা স্নান।
পুত্রশোক প্রসুতি যে স্থির নহে প্রাণ।।
স্নান করে কুলে উঠে চৌদিগ নিহালি।
উচ্চৈঃস্বরে ডাকে ঘন লুহিচন্দ্র বলি।।
কোথা থেকে বাপধন আইস ডাকে মায়।
না দেখে তোমারে মোর ছাতি ফেটে যায়।।
এতক্ষনে মা বলে ডাকিতে কতবার।
স্মরিতে বিদরে বুক সব অন্ধকার।।
অন্যের বালক দেখে হইয়া বিভোলে।
বাহু ধরে লুহিচন্দ্র বলে করে কোলে।।
তা দেখিয়া সধ্নি মাধিনি দুই দাসঈ।
লয়ে গেল নিকেতনে প্রবোধিয়ে আসি।।
পাকশালে প্রবেশ করিল পাক জন্য।
দাসী লয়্যা আয়োজন যোগাইল তূর্ণ।।
পুত্র লেগে পুরে প্রাণ আন নাই মনে।
শোকাকুলি হয়ে রামা বসিল রন্ধনে।।
প্রথমে রাধিল শাক সুক্ত তারপর।
সুপে দিয়া শুষ্ক পত্র সন্বরে সত্বর।।
ভান্ডাকি সহিত ভেজে কটু কটিলনক (?)।
সিদ্ধ করে সুরন ভাজিল দিয়া ডক(?)।।
কাষ্ঠীবল পানিফল অন্য আর কত।
পৃথক পৃথক ভেজে করিল প্রস্তুত।।
রোহিত মৎস্যের জুস যতনে রান্ধিয়া।
রান্ধিল লুয়ার মাংস যত্ন করিয়া।।
পাক হল সমাপন সমাচার ভূপে।
দাসী গিয়ে দ্রুত কয় দ্বিকর আরোপে।।
কুনাথকিঙ্করী বলে কহে গিয়া তূর্ণ।
পারণ করসে প্রভু পাক হল পূর্ণ।।
ব্রম্মচারী বলেন ব্যঞ্জন কি কি বল।
রাজা কয় অম্বল বিনে হয়েচে সকল।।
ধর্ম কন ধরাপাল ধার্য বলি শুন।
পিশিতের অম্বল বিনে না করি পারণ।।
এতেক বচন শুনএ করে যোরহাত।
পিশিত হয়েছে পাক বলে বসুনাথ।।
প্রভু কন পুনর্বার প্রভুত সুমনা।
লুকায়ে লুয়ার মুন্ড রেখেছে মদনা।।
চমৎকার রাজার শুনিয়া হলো চিত্তে।
জায়াকে জানান গিয়ে যাবদীয় তত্ত্বে।।
শুনিয়া স্বামীর তুণ্ডে বচন অশাত।
মদনার মুণ্ডে যেন পড়ে বজ্রাঘাত।।
দূঃখিনীকে পুন পুন কেন দেহ দুখ।।
লইয়া নিভৃতে মুণ্ড লুকায়ে রেখেছি।
তথ্য কই কাস্ত তেঞি প্রাণ ধরে আছি।।
অপর মাংসের অম্বল করে বরং দিব।
থাকুক মুণ্ড চাঁদমুখ বাছার দেখিব।।
মোহ ত্যজ মহিষি গো মহীনাথ বলে।
কেন বৃথা কাতি ধরে কাটা যারে দিলে।।
কাল গেল কর অম্বল করুন পারণ।
দ্বিজ শ্রীমানিক ভনে সঙ্গীত নোতন।। ৩৫।।
কাতরা কান্তের বোলে কাটা মুণ্ড করে কোলে
মদনাবতী করে ক্রন্দন।
এ ঘর বসতি মোর দিনে হল অন্ধকার
কোথাকারে গেলে বাছাধন।
প্রাণ ত্যজে তীক্ষ্ণ বাণে পেয়েছিনু তোমা ধনে
আর ক্লেশ করে বহুতর।
বড় সাধ ছিল যাদু বিভা দিব হবে বধূ
করিব আনন্দে লয়ে ঘর।।
সে সাধ সকলি গেল অবশেষে এই হল
মুখবিধু না পালাম দেখিতে।
আশ্যে আরুষ হএ তোমার মন্তক লয়ে
রেখেছিলাম তার হল দিতে।।
[Page 71-72]

2.

শুনিয়া স্বামীর বাক্য সন্বরি ক্রন্দন।
অম্বলে লুয়ার মুণ্ড করিল রন্ধন।।
পুন গিয়া পৃথীপতি প্রভুকে কহিল।
যে কহিল তুমি তাহা প্রস্তুত হইল।।
বসুনাথ বচনে বিবুধনাথ কন।
কর গিয়ে চতুর্ভাগ ওদন ব্যঞ্জন।।
নৃপ কয় নতি হই নিজ যে (?) পদে।
ভোক্তা নাই চতুর্ভাগ ভুঞ্জিবেক কে।।
ধর্ম কন ভাগ দুই তোমার আমার।
দ্বিভাগ বহিল তার এক মদনার।।
আর যে রহিল ভাগ অবশিষ্ট এক।
শীঘ্র করে নগরের শিশু এক ডাক।।
আগে তাকে সর্ব অগ্রে করাএ অশন।
পশ্চাৎ পুন সে আমি করিব ভক্ষণ।।
না পারিব অপরাধ ক্ষমহ আপনি।
সহরের শিশুকে বরং ডেকে আনি।।
ইহা যদি না কর অনাদি কন হাসি।
না কুরিব পারণা থাকিব উপবাসী।।
ভাষা শুনে ভয়েতে ভাবিত হয়ে ভূপ।
বনিতাকে বলে গিয়ে বচন স্বরুপ।।
শুনে তায় মদনা মিহিষী মহানসে।
কান্দিয়ে করুণা করে কান্ত প্রতি ভাষে।।
কি করিলে প্রাণনাথ কেন আল্যা বলে।
কি করে পুত্রের মাংস খাব হাতে তুলে।।
ভূপ ভাবে ভয় পেয়ে ভাষা শুনে তার।
কিছু না কহিএ আলুম অন্তিকে তোমার।।
কি করিব বিধুমুখি বিষম হইল।
হরিচন্দ্র নাম মোর এত দিনে গেল।।
পতিব্রতা পতিবাক্য বুঝে সমুদয়।
কান্দিতে কান্দিতে কৈল ভাগ চতুষ্টয়।।
দেখে দ্রুত দণ্ডধর দুঃখিত অন্তরে।
শিশু অন্বেষণে আইল সহর ভিতরে।।
হেনকালে অনাদি আনন্দ মায়া করে।
শিশুগণে নিভৃতে রাখিলা সন্বরে।।
খুঁজে না পাইয়া ক্ষুব্ধ হয়ে ক্ষিতিধর।
পুন আইল পুটপাণি প্রভু বরাবর।।
দীন হীন দ্বিজ শ্রীমানিক রস গায়।
সত্য রুপে সখা যার সদা বাঁকুড়ারায়।। ৩৭।।
রাজা কয় প্রভু শুন সমুচিত নিবেদন
বলি তুয়া চরণপুষ্করে।
আজ্ঞা পেয়ে প্রত্যাগার খুজিলাম সবাকার
শিশুমাত্র না পেলাম সহরে।।
কি করি এখন বল পারণ করিলে ভাল
অহাস অতিথি হল্য প্রায়।
যাহা হয় তোমার স্পৃহা বেরিতে করহ তাহা
রাখ মোর পূর্ব ধর্ম যায়।
শুনে এত সুবচন স্মিত মুখ নিরঞ্জন
ছদ্মতা করিয়া ভূপে কয়।
আমার বচন শুন সহরে যাইয়া পুন
ডেকে আন আপন নন্দন।।
শুনিয়া এতেক বাণী হরিচন্দ্র নৃপমণি
চমকিত চৌদিক নিহালে।
দুনয়নে বহে নীর ক্ষিতি অবনত শির
পাড়িল প্রভুর পদতলে।।
[Page 71-72]

3.

দ্বিজ শ্রীমানিক ভনে সখা বাঁকুড়ারায়।
ধনপুত্র লক্ষী হয় সে জন গাওয়ায়।।৪৪।।
আজ্ঞা পেয়ে শ্ররমী হয়ে স্মীরণ মেঘং।
চলে তথি হয়ে অতি খরতর বেগং।।
গুড়্ গুড়্ হুড়্ হুড়্ করে কুলকুলং।
চারি মেঘ চৌদিগে বরিষয়ে জলং।।
শিলকণা ঝণঝণা পড়ে অনির্বারং।
ভাঙ্গে ঘর তারুবর ঝড়ে অন্ধকারং।।
অবিরল সদাক্ষন তড়িত প্রকাশং।
পড়ে বাজ মহীনাশ নির্ঘোষ নিষ্পেষং।।
ত্রিজগৎ চমকিত ভয়ে ভীত লোকং।
সবে কয় বুঝি প্রায় হইল বিপাকং।।
ভৃশবাব একাকার নদ নদী খাতং।
মেঘভব করে রব সুখোচিত চিতং।।
হৃদিমাঝে ধর্মরাজ পদপুণ্ডরীকং।
সদা ভনে ভাবে মনে দ্বিজ শ্রীমানিকং।।৪৫।।
এইরুপে ঝড় বৃষ্টি হল দিবারাত্রি।
না পালান রঞ্জাকে ত্যজিয়া যত যাত্রী।।
ধর্ম কন হনুমান হের শুন বাছা।
ঝড় জল সকল হইল প্রাইয় মিছা।।
তুমি যে সুযুক্তি পাত্র শুন যুক্তি মুল।
চপল করিয়া যাও চাঁপায়ের কূল।।
নিদ্রাছলে চেত্ন হরিবে সবাকার।
এত শুনে অনিল আত্মজ আগুসার।।
পরম আনন্দ পেয়ে প্রভুর আদেশ।
মায়াতে হইলা শ্বেত মক্ষিকার বেশ।।
চঞ্চল চরণে চাঁপায়ে উপনীতি।
শালে ভর দিয়ে যথা পড়ে রঞ্জাবতী।।
মাংসহীন কলেবর আছে অস্থি মাত্র।
তা দেখিয়ে বিকল হইল বায়ুপুত্র।।
অবাক হইয়া কোন অনস্তিকে আসি।
ধন্য ধন্য রঞ্জাবতী ধরমব্রত দাসী।।
আমিনী সাংসুর ভক্তা আদি দিবাকর।
রঞ্জাকে বেড়িয়ে সবে আছে নিরন্তর।।
মায়ারুপা নিদ্রাতে মোহিত করে মন।
একে একে সবাকার হরিলা চেতন।।
হনু যদি চেতন হরিলা যোগবলে.
অজ্ঞান হইয়া সবে পড়িল ভূতলে।।
হরণ করিয়া হনু সবাকার চিত।
ধর্মের সাক্ষাতে শীঘ্র হইলা উপনীত।।
শুভ সমাচার শুনে খুসী নিরঞ্জন।
অনিল আত্মজে দিলা আশিস বচন।।
কিঙ্করীর বাসনা করিতে প্রায় পূর্তি।
বৃদ্ধ ব্রম্মচারী হল্যা ত্যজে নিজমূর্তি।।
ভুরু কামধনু তনু চন্দনে চর্চিত।
বদন শারদ বিধু দেখি বিমোহিত।।
শঙ্খের কুণ্ডল কর্ণে সভা সমুচ্চয়।
করে দণ্ড কমণ্ডলু কৃপালু হৃদয়।।
সমীরণসুত সঙ্গে সঙ্গে জগৎপতি।
চাঁপাই নদীর কূলে হইলা উপনীতি।।
রঞ্জা যথা শালে ভরে পরান ত্যজেছে।
ব্যস্ত হয়ে বিশ্বকর্তা এলেন তার কাছে।।
দাসীর দুর্গতি দেখে দেব দয়াময়।
বাক্য ন। নিঃসরে মুখে হইলেন বিস্ময়।।
শোকাবৃত সজল নয়নে সনাতন।
উচ্চৈঃস্বরে রঞ্জাকে দাকেন ঘুনে ঘন্।।
তোমার বাসনা পূর্ন করিবার তরে।
ব্যামোহ পাইয়া এলাম চাঁপায়ের তীরে।।
পরান ত্যজেছ বাছা শালে দিয়া ভর।
দেখে দুঃখে বাছা মোর বিদরে অন্তর।।
এত বলে বিস্বপতি বিভোল হইলে।
রঞ্জাকে করেন করেন কোলে শালে হতে তুলে।।
গ্লিয়া পড়ছে মাংস অস্থিমাত্র সার।
সমীরণসুত মানে চান করতার।।
না কহিতে সময় বুঝিয়া হনুমান।
চাঁপায়ে জলে তার করাইল স্নান।।
কমণ্ডলু কমল লইয়া করতার।
অঞ্জলি করিয়া অঙ্গে দিলা ভগবান।।
হরি হরি বল সবে রঞ্জা পাল্য প্রাণ।।
হেনকালে মায়া করে লউকালেন ধর্ম।
কারে না দেখিয়া রঞ্জা হইলা নিশর্ম।।
বুঝি পারা প্রতারিয়া গেলেন করতার।
শালে ভর দিয়া প্রাণ ত্যজি পুনর্বার।।
এত বলে রঞ্জাবতী যায় ঝঁআপ দিতে।
ব্যস্ত হয়্যা ধর্মরাজ ধরিলেন হাতে।।
অত্যন্ত অজ্ঞান জ্ঞান নাই ধর্মাধর্ম।
আমি যাতে পাই পীড়া হেন কর কর্ম।।
নিরন্তর ভাব যাকে কর ষার পূজা।
আমিহ সে জন হই শুন বাছা রঞ্জা।।
রঞ্জা কয় তুমি যদি দেব নিরঞ্জন।
শ্বমূর্তি দেখায়ে কর স্নদেহ ভঞ্জন।।
ভকতবৎস্ল ধ্ররম ভক্তের ভাষণে।
শুভরথে অম্বরে উড়িলা সেইক্ষণে।। অত্র ভনিতা।।৪৬।।
[Page 85-87]

4. তৃতিয় পালা

দ্বিজ শ্রীমানিক ভনে সখা বাঁকুড়ারায়।
ধনপুত্র লক্ষী হয় সে জন গাওয়ায়।।৪৪।।
আজ্ঞা পেয়ে শ্ররমী হয়ে স্মীরণ মেঘং।
চলে তথি হয়ে অতি খরতর বেগং।।
গুড়্ গুড়্ হুড়্ হুড়্ করে কুলকুলং।
চারি মেঘ চৌদিগে বরিষয়ে জলং।।
শিলকণা ঝণঝণা পড়ে অনির্বারং।
ভাঙ্গে ঘর তারুবর ঝড়ে অন্ধকারং।।
অবিরল সদাক্ষন তড়িত প্রকাশং।
পড়ে বাজ মহীনাশ নির্ঘোষ নিষ্পেষং।।
ত্রিজগৎ চমকিত ভয়ে ভীত লোকং।
সবে কয় বুঝি প্রায় হইল বিপাকং।।
ভৃশবাব একাকার নদ নদী খাতং।
মেঘভব করে রব সুখোচিত চিতং।।
হৃদিমাঝে ধর্মরাজ পদপুণ্ডরীকং।
সদা ভনে ভাবে মনে দ্বিজ শ্রীমানিকং।।৪৫।।
এইরুপে ঝড় বৃষ্টি হল দিবারাত্রি।
না পালান রঞ্জাকে ত্যজিয়া যত যাত্রী।।
ধর্ম কন হনুমান হের শুন বাছা।
ঝড় জল সকল হইল প্রাইয় মিছা।।
তুমি যে সুযুক্তি পাত্র শুন যুক্তি মুল।
চপল করিয়া যাও চাঁপায়ের কূল।।
নিদ্রাছলে চেত্ন হরিবে সবাকার।
এত শুনে অনিল আত্মজ আগুসার।।
পরম আনন্দ পেয়ে প্রভুর আদেশ।
মায়াতে হইলা শ্বেত মক্ষিকার বেশ।।
চঞ্চল চরণে চাঁপায়ে উপনীতি।
শালে ভর দিয়ে যথা পড়ে রঞ্জাবতী।।
মাংসহীন কলেবর আছে অস্থি মাত্র।
তা দেখিয়ে বিকল হইল বায়ুপুত্র।।
অবাক হইয়া কোন অনস্তিকে আসি।
ধন্য ধন্য রঞ্জাবতী ধরমব্রত দাসী।।
আমিনী সাংসুর ভক্তা আদি দিবাকর।
রঞ্জাকে বেড়িয়ে সবে আছে নিরন্তর।।
মায়ারুপা নিদ্রাতে মোহিত করে মন।
একে একে সবাকার হরিলা চেতন।।
হনু যদি চেতন হরিলা যোগবলে.
অজ্ঞান হইয়া সবে পড়িল ভূতলে।।
হরণ করিয়া হনু সবাকার চিত।
ধর্মের সাক্ষাতে শীঘ্র হইলা উপনীত।।
শুভ সমাচার শুনে খুসী নিরঞ্জন।
অনিল আত্মজে দিলা আশিস বচন।।
কিঙ্করীর বাসনা করিতে প্রায় পূর্তি।
বৃদ্ধ ব্রম্মচারী হল্যা ত্যজে নিজমূর্তি।।
ভুরু কামধনু তনু চন্দনে চর্চিত।
বদন শারদ বিধু দেখি বিমোহিত।।
শঙ্খের কুণ্ডল কর্ণে সভা সমুচ্চয়।
করে দণ্ড কমণ্ডলু কৃপালু হৃদয়।।
সমীরণসুত সঙ্গে সঙ্গে জগৎপতি।
চাঁপাই নদীর কূলে হইলা উপনীতি।।
রঞ্জা যথা শালে ভরে পরান ত্যজেছে।
ব্যস্ত হয়ে বিশ্বকর্তা এলেন তার কাছে।।
দাসীর দুর্গতি দেখে দেব দয়াময়।
বাক্য ন। নিঃসরে মুখে হইলেন বিস্ময়।।
শোকাবৃত সজল নয়নে সনাতন।
উচ্চৈঃস্বরে রঞ্জাকে দাকেন ঘুনে ঘন্।।
তোমার বাসনা পূর্ন করিবার তরে।
ব্যামোহ পাইয়া এলাম চাঁপায়ের তীরে।।
পরান ত্যজেছ বাছা শালে দিয়া ভর।
দেখে দুঃখে বাছা মোর বিদরে অন্তর।।
এত বলে বিস্বপতি বিভোল হইলে।
রঞ্জাকে করেন করেন কোলে শালে হতে তুলে।।
গ্লিয়া পড়ছে মাংস অস্থিমাত্র সার।
সমীরণসুত মানে চান করতার।।
না কহিতে সময় বুঝিয়া হনুমান।
চাঁপায়ে জলে তার করাইল স্নান।।
কমণ্ডলু কমল লইয়া করতার।
অঞ্জলি করিয়া অঙ্গে দিলা ভগবান।।
হরি হরি বল সবে রঞ্জা পাল্য প্রাণ।।
হেনকালে মায়া করে লউকালেন ধর্ম।
কারে না দেখিয়া রঞ্জা হইলা নিশর্ম।।
বুঝি পারা প্রতারিয়া গেলেন করতার।
শালে ভর দিয়া প্রাণ ত্যজি পুনর্বার।।
এত বলে রঞ্জাবতী যায় ঝঁআপ দিতে।
ব্যস্ত হয়্যা ধর্মরাজ ধরিলেন হাতে।।
অত্যন্ত অজ্ঞান জ্ঞান নাই ধর্মাধর্ম।
আমি যাতে পাই পীড়া হেন কর কর্ম।।
নিরন্তর ভাব যাকে কর ষার পূজা।
আমিহ সে জন হই শুন বাছা রঞ্জা।।
রঞ্জা কয় তুমি যদি দেব নিরঞ্জন।
শ্বমূর্তি দেখায়ে কর স্নদেহ ভঞ্জন।।
ভকতবৎস্ল ধ্ররম ভক্তের ভাষণে।
শুভরথে অম্বরে উড়িলা সেইক্ষণে।। অত্র ভনিতা।।৪৬।।
[Page 100-102]

5.

স্ম্রণ করিবা মাত্র সদ্য হইব।
যে বর চাহিবে বাছা সেই ব্র দিব।।
দ্বাদশ বৎসর পূর্ণ হলে দেবমানে।
বৈকুন্থে আনিব পুন চাপায়ে মিবানে।।
অলঙ্ঘ্য প্রভুর বাক্য লঙ্ঘি বাসে ভার।
কত কষ্টে ল্যায়াই করিল অঙ্গীকার।।
এতক্ষণে তরাসে তার অঙ্গে এল জ্বর।
দেখিতে দেখিতে লুপ্ত হৈল্য কলেবর।।
ধরাতলে ধর্মপূজা প্রকাশের তরে।
ল্যাইয়বাই লভিল জন্ম রঞ্জার জঠরে।।
দুই এক মাসে রঞ্জা করে দুয়া ভুয়া।
তিন এক মাস হত্যে চিনহ গেল পাওয়া।।
কুচাগ্রেতে আনি পড়ে পেটে নড়ে ছেলে।
দিবসে দিবসে কত বলহীন হলে।।
ভূতলে শয়ন করে বিছায়্যা আঁচল।
অরুচি আসিয়া অল্প করিলে কবল।।
ওদনাদি ব্যঞ্জনে কেবল দেখে বিষ।
ইচ্ছা হয় আমানি অম্বলে অহর্নিশ।।
নইয়মাসে প্রাপ্ত যবে হইল রঞ্জার।
বসিতে উঠিতে নারে গর্ভ হৈলা ভার।।
বড় কষ্টে উঠে যদি ধর্যা উরুবর।
উঠিলে ঘুরায় মাথা কাঁপে কলেবর।।
সাধ হেতু সংযোগ করিয়া শুভদিনে।
পুরোধার পুরস্ত্রীকে পৃথ্বিনাথ আনে।।
ভূদেব্বহামিনী ভব্যা ভূপবাসে এসে।
জিজ্ঞাসেন যত্নে রঞ্জাকে হেসে হেসে।।
কহ কহ কি সাধ খাইবে রাজরানী।
নতি হয়ে নিবেদন করে নিত্মবিনী।।
শুসুনির শাক এনে সন্বরিবে তৈলে।
শেষে দিবে সর্ষপের বাটনা সিদ্ধ হলে।।
অল্প জ্বালে অল্প অল্প আসিবেক ফুটে।
দৃঢ় করে দিয়ে কাটি দিয় তাকে ঘেঁটে।।
গুঁড়া করে গোটা দশ দিবে তার বড়ি।
অল্প লবণ দিয়ে ওলাইবে হাঁড়ি।।
কটু তৈল কিছু দিয়ে সম্বরিয়া পুন।
প্রচুর পিঠালি দিবে পাক হয় যেন।।
ঠিক বলি ঠাকুরানী ইহা যদি পাই।
এক সের চেলের অন্ন এক গ্রাসে খাই।।
আর এক আছে সাধ আনি পুঁই খাড়া।
যথোচিত জল দিয়া জ্বাল দিবে বাড়া।।
সিদ্ধ হইল শোভা দিবে শোভাঞ্জলি ফুল।
কিছু কিছু দিবে তায় কছু কলা মুল।।
ঝোল রেখে ঝাল দিয়া জ্বাল দিও পরে।
সেই ব্যঞ্জনের সার শুনে মুখ সরে।।
চিংড়ঈ চাঁদ কুড়া মীন চাঁপা নোট শাকে।
অদিক লবণ দিয়া পাক কর্য তাকে।।
তায় দিবে গোটা দশ পনসের বীচ।
প্রচুর করিয়া দিবে পিঠালি মরিচ।।
ঝোলে দিয়া কৈ মাছ করে চড়বড়ি।
তৈলতে ভাজিয়া তায় দিও ফুল্বড়ি।।
নীরস অত্যন্ত হলে তাই দিও নীর।
কাঠি দিয়া করে দ্রব যেন হই ক্ষীর।।
আধারে তুলাইয়া সব বাছিবে কন্টক।
এই ব্যঞ্জনের চূড়া অরুচিনাশক।।
তাই যদি কিছু হই লবণ বিহীন।
খেতে পারি ঢের করে বস্যা সারাদিন।।
শফরীর পেট চিরি বারি করে পোঁটা।
পোড়াবে যতনে যেন থাকে গোটা গোটা।।
লবণ সর্ষপ তৈল কিছু দিবে তায়।
শুনে মুখে সরে জল খাবার নাই দায়।।
ব্রাম্মণী রঞ্জার বাণী শুনে সেইমত।
শাকাদি ব্যঞ্জন রেঁধ্যা করিল প্রস্তুত।।
অনাদি ভাবিয়া রঞ্জা বসিল ভোজনে।
নূত্ন মঙ্গল দ্বিজ শ্রীমানিক ভনে।।৫৩।।
সাধ খেয়ে সুন্দ্রী সুন্দর পেল্য প্রীত।
অনুদিন ঐমনি আনন্দ যথোচিত।।
নিরবধি নিরাতঙ্কে নয় মাস গেল।
সুখ নাই কিছু আর সুতিমাস হৈল।।
দিবানিশি দাসীগণ করয়ে ভাবনা।
পুরস্ত্রী যে কষ্ট পায় প্রসব বেদনা।।
ক্ষণে উঠে ক্ষণে বৈসে ক্ষণে গড়ি যায়।
ক্ষণে উচ্চৈঃস্বরে কান্দে ব্যাকুল ব্যাথায়।।
প্রবীণা প্রবীণা পাআড় পড়শির মেয়ে।
শুনিবা মাত্রেতে তারা সবে আইল্য ধেয়ে।।
কেহ কই কিবা দেখ কথা বটে তাই।
কেহ কয় বিলম্ব নাহিক দাক দাই।।
প্রকার করিল কত প্রসব কারণে।
ঘোষিতের যথা ক্রিয়া যে যেম্ন জানে।।
দ্রুত গিয়া দণ্ডধরে দাসী কয় বাণী।
দাই ডাক প্রসববেদনা পান রাণী।।
পত্তনের প্রান্তে ঘর পাটি নাম তার।
স্বকর্মে সুন্দর প্রজ্ঞা মান্য সভাকার।।
লোক দিয়্যা লঘু তারে নৃপতি আনিল।
প্রসব নিলয়ে পাটি প্রবেশ করিল।।
রঞ্জা কয় দাই দিদি দুঃখ পাই বড়।
বাঁচাও জীবন মোর বলি তোরে দড়।।
যদি ঘুচাতে পার প্রসববেদনা।
প্রভাতে পরাব কানে পুরটের সোনা।।
[Page 168]

6.

চিত্তের উদ্বেগে স্নান করিয়ে চপলে।
পাক হেতু প্রবেশ করিল পাকশালে।।
লঘু লয়ে আয়োজন জোগালেন দাসী।
পাক করে পদ্মিনী পোর্ট পিঠে বসি।।
শাক সুক্তা সুপ রেন্ধে সম্বরিল তৈলে।
ঘৃতে ভাজে ভন্টাকি পটল পাণিফলে।।
নানাবিধি ব্যাঞ্জন সযুক্ত পঞ্চরস।
পরিপাটী করে পাক করিল পায়স।।
লায়সেন কর্পূর ভোজন করে সুখে।
আচমন করে পান ভুঞ্জিল কৌতুকে।।
দুটি ভেয়ে পরে দিব্য দুকুল মেখলা।
যতন করি আনিল জয়খড়্গ খোলা।।
স্মরণ করিয়া ধর্ম চরণারবৃন্দে।
যাত্রা কৈল্য দুটী ভেয়ে মনের আনন্দে।।
বিদায় হইতে গেল বাপের গোচ্র।
প্রণাম করিল কয়ে বিনয় বিস্তর।।
মায়ের চরণ ধরে দিল পদধূলি ।
আশিষ করিল রঞ্জা শোকেতে আকুলি।।
যেন কেহ কার প্রাণ কেড়ে ল্য্যা যায়।
কোলে করে কমলবদনে চুম্ব খায়।
দুটি হাথে ধরে কয় দুস্খিতা দারুন।
তোমা হৈতে কর্পূর আমার দশগূণ।।
কয়ো নাই কুবচন ক্রো নাই দ্বন্দ্ব।
লয়্যা যাবে আগে করে না বলিবে মন্দ।।
খুধা না সহিতে পারে খাওাবে সকালে।
নাড়ু মুড়ি মুড়িকি চইড়া মুনাম মিসালে।।
যথা কালে অদনাদি পাক করে দিবে।
কোলে করে রাত্রিকালে শয়ন করিবে।।
মায়ের মরম কথা মনে যেন থাকে।
কোরো নাই কদাচ বিশ্বাস মাহুদেকে।।
[Page 179]

7.

নৃপতি নফরে কয় লঘু আআন জল।
তৃষনায় বিকল তনু হয়েছি বিকল।।
নফর নৃপতি বাক্যে লঘুগতি ধায়।
সন্নিকটে সরোবর দেখিবারে পায়।।
যবে এশে জলে নেবে জলাধার পুরে।
বেনাবনে বাঘটা বশিয়ে যুক্তি করে।।
এ বেতার সঙ্গে আমি নৃপালয়ে যাব।
হাতি ঘোড়া মেরে ধরে পেট ভরে খাব।।
রানীদিগে খাব আর অন্যে পরে কি।
অবশেষে রাজার মাথার খাব ঘি।।
জলে মলাম ক্ষুধায় জনমাধবি হতে।
বলে এত বাঘটা বসিল মধ্যপথে।।
জেতের স্বভাব ধর্ম সঙ্কুচিত গা।
সমতুল দেখি যেন শশকের ছা।।
নির্লয়ে নৃপের নফর লঘু পায়।
পড়েছিল বাঘটা ধরিল তার পায়।।
শশকশাবক বলে দেখে সুখী হল।
ঐমনি ধরিয়ে তাকে আঁচলে পুরিল।।
বলে আজি লয়ে তর ঘরে রব অচিরাৎ।
দগ্ধ করে দু সের চেলের খাব ভাত।।
জল লয়ে জাল্লালশিখরে যবে দিল।
পীযূষ সমান পয় পানে প্রীত পাইল।।
বারণ বাজীর শব্দ বাঘটা শুনিয়ে।
মনে করে ঘাড় ভেঙ্গে খাব বারি হয়ে।।
এত বলে আঁচল চিরিয়ে বারি হল।
ঐমনি বাতাস পেয়ে বাড়িতে লাগিল।।
দেখে বলে দণ্ডধর দেখি দেখি আন।
আজি হৈতে বাহগ শিশু আমার পরান।।
লয়ে ঘরে রানীকে যতন করে দিব।
পুত্র নাই পুত্র তুল্য পালন করিব।।
[Page 183-185]

8.

বন্দী হৈল বাঘ রার দৈবের ঘটন।
ক্ষিপ্র কয় ক্ষিতিনাথে খবর তখন।।
শুনে শুভ বারতা সন্তোষ হৈল মনে।
অনেক ইনাম দিলেন অনুচরগণে।।
লোক লয়ে নৃপবর বাঘ কামদলে।।
শকটে করিয়া তুলে রাখে রঙ্গশালে।।
ক্রধ করে কৈল তার আহার কারণ।
স্বয়ং দোষে শার্দুলের সংশ্য জীবন।।
এই কথা কহিতে বলিতে দুটি ভাই।
চিল গ্রাম হইয়ে পার চলে ধায়ধাই।।
লাউসেন জিজ্ঞাসেন পুন কর্পূর কহেন।
অন্য উপাধ্যান দাদা মন দিয়ে শুন।।
ব্রতমধ্যে একাদশী পুন্যত মহান।।
চারিমুখে ব্রম্মা প্রভাব যার কন।।
লক্ষন লখিয়ে কই নিস্তারিত জীব।
উপবাস আপুনি করিলা সদাশিব।।
কৃষ্ণসেবা কর তবে কাত্যায়নী কন।
ঈশ্বর খেন তবে কর আয়োজন।।
প্রভুবাক্যে পার্ব্বতী পেলেন পরম প্রীত।
যোগালেন আয়োজন করিয়ে ত্বরিত।।
কৃষ্ণসেবা কীর্ত্তিবাস করিলেন তবে।
পুলকে পুর্ণিত তনু গদ্গদ ভাবে।।
যোগ পেয়ে জগৎকর্তা যোগে যোগাভ্যক।
এক লক্ষ হরিনাম করিলেন জপ।।
দুখে সুখে রাত্রি গেল দিবা উপস্থিতে।
শঙ্করীকে শঙ্কর কহেন শর্মচিত্তে।।
কাল গেছে উপবাস কি কর কাত্যায়নী।
পারণ করিব চেষ্টা পাইবে আপুনি।।
ক্ষীন দেহে ক্ষেমঙ্করী ক্ষুধা নাহি স্য।
শাক সুক্তা যা হোক সকাল যেন হয়।।
বুড়াটির বচনে বারেক দিবে মন।
ভাল হয় কিছু হলে রসাল ব্যঞ্জন।।
শুনে এত শঙ্করী সম্মুখে জোড় হাত।
পারণ করিতে চায় ঘরে নাই ভাত।।
চমৎকার চন্দ্রচূড় চন্ডীর বচনে।
শুন্য হইল সব কথা সুখ নাই মনে।।
উপবাস একে তায় কাঁপে বঠে গা।
কয়ে কথা কষ্ট দিলে কার্তিকের মা।।
বিপরীত বাক্য শুনে গেল বুদ্ধিবল।
কালিকার ভিক্ষার চাল উড়ালে সকল।।
দুর্গা কন দুখিঃনীকে দোষ দেবে বটে।
যার সে ভিক্ষার চাল তারে নাঁই আঁটে।।
ভিখারীর ভাগ্য পোড়ে ভাত নাই জুড়ে।
তৈলবিহীন তনুতে তনুতে কেবল খড়ি উড়ে।।
না পাই পড়িতে বস্ত্র পরি বাঘছাল।
পাঁচমুখে পাঁচকথা অশেষ জঞ্জাল।।
ব্রম্মার ব্রম্মাণী বস্ত্র অলংকার পড়ে।
খাটে বসে গুয়া পান খায় গআল ভরে।
আমার এমন দশা অন্ন যদি জুড়ে।
তাম্বুল বিহনে তায় মুখে গন্দ ছাড়ে।।
ভক্তকে অখিল ভরে দিতে পার ধন।
পার নাই পুষিতে আপ্ন পরিজন।।
অন্যের বালক তারা ক্ষীরক্ষণ্ড খায়।
কার্তিক গ্ণেশ রোর অন্নকে লালায়।।
না শুনে বচন লোক বলে লক্ষীছাড়া।
ভীত হয়ে নীত কথা কই নাই বাড়া।।
তোমার সে নিত্য নাই তত্ত্ব করে কে।
কুবের ভাণ্ডারী আছে কত দিবেক সে।।
ভব কন ভবানী ভক্তের বারি যাব।
দেও ধন ভিক্ষা করে নিত্য এনে দিব।।
পার্বতী কহেন প্রভু সঙ্গে যাব স্বত।
দেখিব তোমার ভক্তে ভক্তি করে কত
বৃষেতে চাপিলা শিব সিংহে শৈলসুতা।
চারি মুখে হ্রিনাম একে রামকথা।।
বিষম ধর্মের মায়া বোঝনে না যায়।
দীনহঈন দ্বিজ স্রীমানিক রস গায়।।৯৫।।
শিখর দেশের রাজা শিখিধ্বজ নাম।
শত্রুসম শিবের আশিষে বিত্তবান্।।
না খায় ওদন জল শিবপূজা বিনে।
সদা তার মতিগতি শিবের চরণে।।
প্রথমে পার্বতীনাথ এল তার ঘর।
দূত গিয়ে দণ্ডধরে দিলেক খবর।।
ধরাধর আপনাকে ধন্য ধন্য কয়।
পুলকে পুরিল তনু প্রেমধারা বয়।।
শিখিধ্বজ শিব দুর্গা সাক্ষেতে দেখিয়ে।
অভয়চরণে পড়ে অষ্টাঙ্গ লোটায়ে।।
বিনয়বচনে বলে বিশ্বের কারণ।
কিঙ্করে করিতে কৃপা করেচ আগমন।।
বিচিত্র আসন দিল বেদির উপরি।
বসিলেন বিশ্বনাথ বীরাস্ন করি।।
বামভাগে পাইল্য শোভা পর্বতনন্দিনী।
কনকমেঘের কোলে যেন কাদম্বিনী।।
দু নয়নে দেখে রাজা দুটি হাত বুকে।
শিব শিব শঙ্করী সঘনে বলে মুখে।।
ঊর্ধ্ববাহু হয়ে নাচে অঝোর নয়ণ।।
অনেক করিল স্তব অহেতু হেত্বাদি।
প্রদক্ষিন প্রণাম পর্যন্ত যথাবিধি।।
[Page 268-269]

9.

জৌঘরে পাণ্ডব পাবকে নাই মল্য।
তপ্ত তৈলে সুধম্বার তনু নাঞি গেল।।
ত্রলোকতারণ তিনি ভকতবৎসল।
চিন্তা কর চিত্তে তাঁর চরণ কমল।।
নিতান্ত নয়নকোণে নাঞি যদি চান।
তবে অন্ন না খাইব ত্যজিব জীবন।।
সুরিক্ষার সদাই সহজে সুখি মন।
স্থান কর্যা স্বর্ণ থালে থ্যাতায় ওদন।।
শাকাদি ব্যঞ্জন সব সুবর্ণ বাটীতে।
থরে থরে থেতার থালার চারি ভিতে।।
সেন কয় স্বর্ণ থালে খাব নাই ভাত।
প্রশস্ত কয়্যাচি পূর্বে তেঁতুলের পাত।।
নটিনী নাগরগণে লঘু কয় বার্তা।
তৎকাল আনিঞা দিল তেঁতুলের পাতা।।
সঙরিয়া কালীর কমল পদদুটি।
পানপাত্র পাতের করিল থালা বাটী।।
সুরিক্ষার সিদ্ধ হল স্মুদ্য কাজ।
সুবিস্ম্যে লাউসেন সঙরে ধর্মরাজ।।
কান্দিয়া সে কর্পূর কপালে মারে ঘা।
তবে দাদা গলায় দেয় আমার পা।।
বিষতুল্য বেউশ্যা মাগীর হাতে ভাত।
থাকুক খাবার দায় দেখ্যা উঠে আঁত।।
সুরিক্ষা তখন কয় সারদিন গেছে।
ক্ষুধায় কমলমুখ মলিন হয়েছে।।
গা তুলে ভোজন কর গুণনিধি রায়।
স্মরশরে জর জর সুখ নাই গায়।।
আয়োজন করিতে আমার প্রাণ গেছে।
বিলম্বন করিলে বিফল হই পাছে।।
কান্দিয়া কর্পূর কয় বচন বিকল।
ন্টিনী মাগীর হাতে মজালে সকল।।
মনে করে মায়াধরে ময়নার পতি।
তোমা পঊজে এত দিনে এই হল্য গতি।।
কান্দিলে কি হই প্রাণের কর্পূর।
নিশ্চয় হলাম বান অনাদ্য ঠাকুর।।
গা তুলে ভোজন কর ভাব অকারণ।
দ্বীজ শ্রীমানিক ভনে সখা নিরঞ্জন।। ১৩০।।
স্ত্য করে বিপর্যয় লঙ্ঘিলে অধর্ম হয়
পালন করিলে পার পাই।
ভাবিয়া ভারতীকূলে ভাসিয়্যা লোচন জলে
ভোজনে বসিল দুটী ভাই।।
কর্পূর তখন কয় শুন দাদা মহাশয়
বিপাক হৈলে কিবা দেখ।
আমার বচন সার এইকালে একবার
অর্জুনসারথি বল্যা ডাক।।
শুনি বাক্য পয়ফেন কান্দিতে কান্দিতে সেন
হাতে নিল গণ্ডুষের জল।
উচ্চৈঃস্বরে ঊর্ধমুখে কাত্র হইয়া ডাকে
কোথা ধর্ম বকতবৎসল।।
পুরাণে শুন্যাচি যশ ব্যাধের হইল বশ
তদুচ্ছিষ্ঠ হাত পাতে নিলে।
বিমাতাবচনে রোষে ধ্রুব গেল বনবাসে
তাকে তুমি সদ্য হইলে।।
সুদামার সখা হইলে বিদুরে বিমুক্তি দিলে
পাণ্ডবের হইলে সারথি।
কুরুকুলে কৈলে নাশ পুরিব মনের আশ
আর দিলে হস্তিনা বসতি।।
খাই বেউশ্যার ভাত জাতি যায় জগন্নাথ
স্মরি তোমা সঙ্কটে পড়িয়া।
[Page 329-331]

10.

ব্রম্মার হাতের মালা ব্রুনের অসি।
সফুল্লা পেলে কোথা হইয়া মানুষী।।
শুনিব তোমার মুখে সব সমাচার।
তবে যাব লাউসেনে করিতে উদ্ধার।।
ধর্ম কন ধরনীয়ে ধর্মপাল রাজা।
কেবল কর্ণের তুল্য করে কৃষনপূজা।।
দিবানিশি ব্রাম্মণ ভোজন দানধ্যান।
ভক্তিভাব কর্যা শুনে ভারথ পুরাণ।।
পুত্র নাঞি পূর্বকালে ছিল কিছু পাপ।
অতুল ঐশ্বর্য ঘর আস্নন্দে বিলাপ।।
প্রজার পালন করেন পুত্রের সমান।
কৃষ্ণকথা রামকথা করে সদেয়া গান।।
একদিন মৃগয়া করিতে হৈল মন।
সফুল্লাকে কয় ডেক্যা সুপ্রিয় বচন।।
মৃগয়া করিতে যাই ততক্ষনে আসি।
স্ববাসে রহিলে তুমি শুন গো রুপসী।।
পাপ পুন্য সুখ দুস্খ ধর্ম অর্থ লাগি।
অর্ধ অঙ্গ জায়া হয় অর্ধেকের ভাগী।।
আজি কর কৃষ্ণসেবা আমার বদলে।
শুদ্ধভাবে পুরাণ শুনিবে সন্ধ্যাকালে।।
কাঞ্চন মুকুতা মণি কর্যা পুণ্যমান।
দক্ষিণা সহিত কর্যা দ্বিজে দিবে দান।।
গরিব কাঙ্গান দেখ্যা দিবে কিছু ধন।
করাইবে এক লক্ষ ব্রাম্মণ ভোজন।।
চন্দন চাঁপার মালা কুমকুম কস্তুরী।
পূজিবে দ্বিজের দুটি চরণমাধুরী।।
বেদে বলে চারিকালে সজীব ব্রাম্মণ।
যার পদচিহ্ন কৃষ্ণ করিলা ধারণ।।
এতেক কহিয়া রাজা মৃগ্যা গেল।
সৈন্য স্নে গর্জনে গহন প্রবেশিল।।
ওখা গায়ে ভূপতি ভার্ষার যশগূণ।
এথা স্ফুল্লার প্রতি কৃষ্ণ নিদারুণ।।
লঙ্ঘিল নাথের বাক্য না করিল কিছু।
এই অপরাধে কষ্ট ভুঞ্জিবেক পাছু।।
আপুনি করিয়া স্নআন ভোজন সকালে।
দাসী সঙ্গে পালঙ্কে বসিয়া পাশা খেলে।।
পাশায় মঞ্জিল মন হত হৈল জ্ঞান ।
না করে কৃষ্ণের সেবা না পরে পুরাণ।।
হেন কালে রাজা আইল মৃগয়া করিয়া ।
নয় হয়্যা সফুল্লা নিকটে আইল ধেয়্যা।।
পাখালিয়া চরণ চিকুরে কর্যা মুছে।
জিজ্ঞাসা করেন রাজা বসাইয়া কাছে।।
কহ প্রিয়া কি ধনে করেচ কৃষ্ণসেবা।
শুনিলে সফল হই আজিকার দিবা।।
কি দান দিয়াছ দ্বিজে কাঙ্গালে কি ধন।
কোন অধ্যা ভারথের কর্যাচ শ্রবণ।।
শুণ্যা বাক্য স্ফুল্লার শুখাল ব্যান।
পড়িল চ্রণে কেন্দা উড়ীল পরান।।
আমি দড় পাতকী প্রস্নন নয় দশা।
করি নাই কৃষ্ণসেবা কাল হৈল পাশা।।
না শুনেচি পুরাণ বিনষ্টচিত্ত মোর।
প্রভু দেয় প্রতিফল পাপ হৈল ঘোর।।
রাজা কয় তোর পারা কে আছে চান্ডালী।
না করে কৃষ্ণের সেবা অন্ন জল খেলি।।
আর ফিরে তোর মুখ আমি না দেকিব।
ঈহার উচিত ফল বনবাস দিব।।
নফরে কহিল রাজা শুন বলি রে।
স্ফুল্লা চক্ষের বালি বনবাস দে।।
শুনে সোকে সর্ব লোক করে হায় হায়।
সফুল্লা রাজার রানী বনবাস যায়।।
[Page 329-331]

11. অষ্টম পালা

নফর নৃপতি বাক্য না করে লঙ্ঘন।
রেখ্যা এল বাল্মীকি মুনির তপোবন...
দ্বিজ শ্রীমানিক ভনে কপালের লেখা।
ব্রাম্মনের বেশে ধর্ম যারে দিল দেখা।। ১৫৭।।
ঢর্ম কন শুন বাছা পবনকুমার।
রাবণে বধিতা আমি রাম-অবতার।।
অ্যোধ্যায় অশ্বমেধ হইল যে কালে।
লয়ে ঘোড়া লক্ষণ শিত তুমি গেলে।।
লবকুশ আছিল বাল্মীকিমুনি ঘরে।
জোর কর্যা জয়াঙ্কে যজ্ঞের ঘোড়া ধরে।।
বাদাবাদে বিবাদ বড়ই হৈল শেষে।
লক্ষণে তোমাকে বন্দী কৈল নাগপাশে।।
কংসকে বধিতে আমি কৃষ্ণ অবতার।
সেই বনে হল্য অঘাসুরের সঙ্ঘার।।
কেশীবধ হৈল আর শকটভঞ্জন।
গো বৎস হরণে হল্য ব্রম্মার মোহন।।
এতেক অদ্ভুত লীলা দেখিয়া নজরে।
সুখচিত স্ফুল্লার দুস্খ গেল দূরে।।
অল্পদিন আনন্দে রহিল সেই খানে।
কাননে আমার সেবা করে একমনে।।
কঠোর হিল কত ক্ষীণ হল্য কায়া।
দয়া কর্যা দিলাম দক্ষিণ পদছায়া।।
চর্ব চোষ্য লেহ্য পেয় ভক্ষ্য বহুতর।
বিলক্ষন বিপিনে হইল বাড়িঘর।।
গৌতম মুনির কন্যা তার সনে সই।
রাজা গেল মৃগয়ায় কথ দিন বই।।
সৈন্য সনে গর্জনে গহন প্রবেশিল।
শরভ্রষ্টপদ পশূ সম্মুখে দেখিল।।
[Page 541-544]

12. দ্বাদশ পালা

শ্রীধর্মচরণে মঞ্জায়্যা চিত।
মানিক রচিল মধুর গীত।। ২৬৮।।
চিত্তের উদ্বেগে রামা চিত্রসেন লয়্যা।
কানড়ার হাতে হাতে দিলেন সঁপিয়া।।
মোহন মানিক ধন মায়ের পরাণ।
পালন করিবে বলি পুত্রের সমান।।
স্তিনীর বেটা বল্যা না বাসিবে ভিন্ন।
চিত্তে স্নেহ করিবে অধিক চির দিন।।
প্রাণপতি আইলে ন্তি জানাবে আমার।
ফির্যা যদি আসি ধার শুধিব তোমার।।
এত বল্যা দুনয়নে বহে অশ্রুধারা।
সমরে সাজন করে সহজে কাত্রা।।
অমূল্য টোপ্র শিরে অষ্টদিক্ শোভা।
বিধুকে বেরিয়ে যেন বিদ্যুতের আভা।।
সিন্দুর শোভিল ভালে সুরঙ্গ আকার।
হরিমুখী হেত্যার লইল হীরাধার।।
সাজ কর্যা বাজীর বারণ জোগাইল।
পদ্মমুখী কলিঙ্গা প্রধানে পীট নিল।।
একে সে অব্লা তাই অষ্টমাস গর্ভ।
উঠীতে অবশ অঙ্গ বসিতে অথর্ব।।
কেবল সাহস মনে কালীর চরণ।
সমরে প্রবেশ গিয়া সিংহিনী যেমন।।
ঐমনি আরম্ভে যুদ্ধ উর্যা ঢাল খাঁড়া।
হানে হই পদাতিক হস্তী জোড়া জোড়া।।
সিফাই সর্দার ঘের্যা ধ্র্যা করে বধ।
প্রবন্ধ তখন ভাবে পাত্র মহামদ।।
গৌণ হয়ে গঙ্গাধর ভাটে দেকে ভাষে।
রণে এল লাঊসেন রমণীর বেশে।।
পাগল পাপিষ্ট হেদে পামর পাষণ্ড।
লুকায়্যা আছিল ঘরে না গিয়া হাকণ্ড।।
পশ্চিম উদয় দিব করে নিরুপণ।
বাপ মায়ে বন্দী দেই বিনষ্ট এমন।।
জগতে সমান গুরু নাই যার পর।
হেন জন কষ্ট পায় হায় কি পাম্র।।
নিতম্বিনী নিন্দা শুনে নাথের তখন।
মরমে নির্ঘাত শেল বাজিল তখন।।
সাত দিন সেন আজি গেছেন হাকণ্ডে।
নয় নবলক্ষ দল লয় এক দণ্ডে।।
সেনের রমণী আমি অব্যয় সমান।
কর্পূরধলের বেটি কলিঙ্গা আখ্যান।।
পাত্র বলে রাম রাম পূর্ণ হল কলি।
কুলীনের কামিনী হয়্যা কুলে দেয় কালী।।
ভাগিনীবৌ বাছা কি ভারত ছাড়া মেয়্যা।
তিলেক সম্ভ্রম নাই শ্বশূর বলিয়া।।
হেঁট মাথা শূনে কথা হেন ছার বেটি।
গরি হল কেবল যেন গোলাহাটের নটী।।
এত শুন্যা কলিঙ্গা লজ্জাই অধোমুখী।
অনুরাগে সঁজল হইল দুটি আঁখি।।
ঘরমুখে ঘোড়ার ফিরায় বাগডোর।
বলে এতে কপালে ছিল অপযশ মোর।।
হাস্নে দিলেক টের্যা মাহুদ্যা পাতর।
যবন আগুলে পথ যমের দুস্র।।
যুবতীজীবন ভয় পাছে যায় জাতি।
ত্রুনী তিয়াগে তনু গলে দিয়া কাতি।।
কলিঙ্গা পড়ীল যদি কপালে দোষে।
অম্বির পাথর তবে অশড়ুজলে ভাসে।।
সম্বরিয়া ক্রন্দন সংগ্রামে করি বল।
দ্বিজ শ্রীমানিক ভনে শ্রীধর্মমঙ্গল।। ২৬৯।।
অম্বির পাথর ঘোড়া অবিসার রণে।
জ্বলন্ত আগুন হয়্যা যুঝে ঘোর রণে।।
ঘুরুন্যা বাতাস যেন ঘুর্যা ঘুর্যা যায়।
বিনাশে বারণ বাজী সম্মুখে যে পায়।।
উঠে পড়ে অন্তরীক্ষে অনিলপ্রকাশ।
চরণ চাপটে সেনা চৌদিগে বিনাশ।।
বিক্রমে বিশাল বল বিরোধ না মানে।
চূর্ণ করে রথ রথী চিবায়ে দশনে।।
রাউত সিফাই রণে রাগে হল তারা।
শড় এড়ে সঘনে সমান বৃষ্টিধারা।।
আগুন হইল ঘোড়া অরুসে আরব।
রণে ভঙ্গ দিলেক রাজার সৈন্য সব।।
উধাঙ করিল ঘোড়া অনিল মিশালে।
তবে তূর্ণ উপনীত হইল তবলে।।
কলিঙ্গা স্মঢ়ণে স্মরণে স্কাত্র।
সঘনে হেস্রে ঘোড়া মন্দুরা ভিতর।।
কানড়া শুনিতে পায় ঘোড়ার কাবাই।
দিদি আল্য বলিয়া আনন্দে ধারাধাই।।
কলিঙ্গা পড়্যাচে রণে ফির্যা এল ঘোড়া।
ঐমনি কাছাড় খায়্যা পড়িল কানড়া।।
কপালে কঙ্কন হানে করে হায় হায়।
ধুমসী প্রবোধ কর্যা কর্যা লয়্যা যায়।।
সতিনীর শোকে রামা বিকল শ্রীরে।
সম্বরিয়া ক্রন্দন সমরে সাজ করে।।
মণিময় টোপর কিরণ করে মৌলি।
সোনার কাবাই পরে সুচিত্র কাঁচুলি।।
বৃন্দাবন লেখা তায় বিহারের স্থল।
চমৎকার চক্রভেদে শ্রীরাসমণ্ডল।।
যত গোপী তত কৃষ্ণ চতুর্দিকে সাজে।
রসম্যী আপুনি রাধিকা তার মাঝে।।
কোকিল পঞ্চম গায় কুহু কুহু রব।
ময়ূর ময়ূরীনাচে মত্ত হয়্যা সব।।
কপালে সিন্দুর ফোঁটা করে ঝলমল।
কুরঙ্গ নয়নে সাজে কাশ্চিৎ কাজল।।
হেতার লইল যার হীরাধারে জ্বলে।
ঢাকিল সকল অঙ্গ অনুপম ঢালে।।
পাছু আসি সাজিল ধুমসী পরাধিকা।
আক্রোশ আকার যেন আগুনের শিখা।।
বিরাজ করেন জথা বিশ্বের ঈশ্বরী।
কাত্রা তথায় গেল কানড়া কুমারী।।
অনুরাগে আপ্লাবিত অঙ্গ অশ্রুজলে।
সম্মুখে সম্পুট করে সবিন্য বলে।।
দ্বিজ শ্রীমানিক ভনে কপালের লেখা।
ধরমের রূপে ধর্ম যারে দিলে দেখা।। ২৭০।।

করুণা রাগেণ গীয়তে

অবনী লোটায়্যা কায় কানড়া কালীর পায়
করপুটে করে নানা স্তুতি।
নিজগুণে কর দয়া দেহ দুটি পদছায়া
দূর কর দাসীর দূর্গতি।।
পুরাণে মহিমা শুনি পরব্রম্মা সনাতনী
পরমকারণী পরাৎপরা।
কলুষনাশিনী ত্রয়ী কালরাত্রি কৃপাময়ী
কলি ঘোর ভবভয়হরা।।
অবলা অবোধ্মতি না জানি ভজন ভক্তি
ঐমনি ভরসা কেবল।
স্তিনী সমরে মল্য পতি পরায়ণে গেল
ধনে প্রানে মজিল সকল।।
দুস্খের নাহিক ওর শ্বসুর শ্বাশুড়ী মোর
দৈবদোষে গৌড়দেশে বন্দী।
[Page 555]

13.

ব্যাধিযুক্ত হল্য রাজা বিধির ঘটন।
তিয়াগিয়া রাজভূমি তপশ্যায় মন।।
কঠোরে কৃষ্ণের সেবা কৈল রাত্রিদিন।
ত্যাজিল অন্নজল তনু হল্য ক্ষীণ।।
দৃঢ় ভক্তি দেখিয়া দয়াল দেব হরি।
দরশন দিলেন বিপিনে দ্যা করি।।
ভূপাল ভূমিষ্ট হয়্যা ভাবে সবিনয়।
দৈবকীনন্দন দূর কর ভয়।।
হরি কন হইয়্যা তুষ্ট হরষ বিভোলে।
অষ্টবর্গ সিদ্ধি হবে আমাকে ভজিলে।।
যেই পক্ষে পালন করিলে পুত্র প্রায়।
সেই পক্ষে ভক্ষণ করিলে ব্যাধি যায়।।
অনন্য করিল জ্ঞান ঈশ্বরের বাক্য।
প্রাণ দিয়া রাজার লবণ শুধে পক্ষ।।
এত যদি শারী শুক কহিল পুরাণ।
তা শূন্যা রাজার হল্য অঝোর নয়ান।
লিখন লিখন তবে নিরাহিত মন।
দ্বিজ শ্রীমানিক ভনে সখা নিরঞ্জন।। ২৮৭।।
স্বস্তিকাদি শুভাশিস সাদ্র ম্নমত।
বিজ্ঞাপন বিশেষ বারতা বিশেষত।।
কলিঙ্গা কমল্মুখী কমলের লতা।
কি কহিব তোমার চরিত্রগুণ কথা।।
চিত্রসেন না দেখিয়া চিত্ত উচাটন।
সদাই উদ্বেগ পাই তোমার কারণ।।
হান্তকণ্ডে প্রভুর পূজা প্রতিদিন করি।
প্য জল ওদন পর্যন্ত পরিহরি।।
ঊর্ধপথে পায় অর্ঘ্য অন্য দিন দিলে।
অদ্যাপি পড়িল ফিরে অতক্রের জলে।।
This is a selection from the original text

Keywords

অন্ন, ক্ষুধা, ঝড়, বৃষ্টি, ভাত, মাংস, মাছ, রন্ধন, শাক

Source text

Title: Dharmamangal

Author: Manikram Ganguly

Editor(s): Bijitkumar Datta & Sunanda Datta

Publisher: Calcutta University

Publication date: 1960

Original compiled c.1750-1800

Edition: 1st Edition

Place of publication: Calcutta

Provenance/location: This text was transcribed from print at the National Library of India. Original compiled c.1750-1800

Digital edition

Original author(s): Manikram Ganguly

Original editor(s): Bijitkumar Datta & Sunanda Datta

Language: Bengali

Selection used:

  • 1 ) pages 67 to 59
  • 2 ) pages 71 to 72
  • 3 ) pages 85 to 86
  • 4 ) page 168
  • 5 ) page 179
  • 6 ) pages 183 to 185
  • 7 ) pages 268 to 269
  • 8 ) pages 329 to 331

Responsibility:

Texts collected by: Ayesha Mukherjee, Amlan Das Gupta, Azarmi Dukht Safavi

Texts transcribed by: Muhammad Irshad Alam, Bonisha Bhattacharya, Arshdeep Singh Brar, Muhammad Ehteshamuddin, Kahkashan Khalil, Sarbajit Mitra

Texts encoded by: Bonisha Bhattacharya, Shreya Bose, Lucy Corley, Kinshuk Das, Bedbyas Datta, Arshdeep Singh Brar, Sarbajit Mitra, Josh Monk, Reesoom Pal

Encoding checking by: Hannah Petrie, Gary Stringer, Charlotte Tupman

Genre: India > poetry

For more information about the project, contact Dr Ayesha Mukherjee at the University of Exeter.

Acknowledgements